ঢাকা ১১:৩৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৬ মে ২০২৪, ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গণপূর্ত ভবনে চলছে জামায়াত-শিবির পুনর্বাসন

  • Reporter Name
  • আপডেট টাইম : ০১:৩৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭
  • ৪৪৭ বার

সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর মধ্যে একটি গণপূর্ত অধিদপ্তর। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও অধিদপ্তরটিতে চলছে জামায়াত-শিবির পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। আর সেটির নেতৃত্বে রয়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের নতুন দায়িত্ব পাওয়া প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব নিশ্চিত করেছে। পূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে পূর্বপশ্চিমের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হলো আজ।

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান মুন্সী অবসরে গেছেন। তখন থেকেই বিএনপি-জামায়াত সমমনা হিসাবে সেই সময়কার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম দৌঁড়ঝাপ করে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের পদে বসেন।

বিএনপি-জামায়াতপন্থি আমলা হিসাবে পরিচিত হলেও সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তিনি প্রধান প্রকৌশলীর পদ দখলে দেন। এরপর শুরু হয় স্বেচ্ছাচারিতা। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি বেপোরোয়া হয়ে নিজের পছন্দের লোকদের ঢাকায় বদলি করে নিয়ে আসেন। একইসঙ্গে ৮ জন ডিভিশন প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করা প্রকৌশলীকে ঢাকার বাইরে বদলী করে দেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের এভাবে বদলী করা নিয়ে পূর্তভবনে এক ধরণের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটিতেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তুলকালাম হয়েছে। সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে প্রত্যেক সদস্যের জেরার মুখে পড়েন প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। কেন মাত্র ৬ থেকে ১০ মাস আগে ঢাকায় বদলী হওয়া অফিসারদের আবারো ঢাকার বাইরে পাঠানো হলো? এমন প্রশ্নের জবাব জানতে চায় সংসদীয় কমিটি। কিন্তু কোনো উত্তর দিতে পারেননি রফিকুল ইসলাম।
rafiqul
সংসদীয় কমিটির এক সদস্য এ প্রতিবেদকে বলেন, একজন অফিসারকে কমপক্ষে তার কাজ ভালোভাবে করার জন্য ৩ বছর সময় দেওয়া উচিত। বারবার বদলীর ফলে তার পরিবার পরিজন নিয়েও বিপাকে পড়তে হয়। প্রধান প্রকৌশলী তার নিজের পছন্দের লোকদের বসিয়ে নিজের কমিশন বাণিজ্যটা ভালোভাবে চালিয়ে যেতে চাচ্ছেন বলেই এমনটা করেছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে বলেওও জানান সংসদীয় কমিটির ওই সদস্য।

এদিকে পূর্ত অধিদপ্তরের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রধান প্রকৌশলী হিসাবে যোগদানের পর থেকেই নিজের পছন্দের বিএনপি-জামায়েতের লোকদের ঢাকায় বদলী করে নিয়ে আসছেন। এতে করে সরকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।

উল্লেখ্য মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকাদের শিরোমনি, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আজমের বোনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাম আজমের পরিবারেরই একজন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে পূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। এমনকি কথা বলার জন্য এ প্রতিবেদকের মুঠোফোন থেকে এসএমএস করা হলেও তার জবাব দেননি। পরবর্তীতে প্রধান প্রকৌশলীর অফিসে ফোন করলে তিনি ব্যস্ততার দোহািই দিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। কিন্তু তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মফিজ এ প্রতিবেদককে তার অফিসে যাওয়ার জন্য দাওয়াত দেন।

Tag :

Write Your Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Save Your Email and Others Information

About Author Information

Haor Barta24

গণপূর্ত ভবনে চলছে জামায়াত-শিবির পুনর্বাসন

আপডেট টাইম : ০১:৩৬:৩৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ মার্চ ২০১৭

সরকারের গুরুত্বপূর্ণ বিভাগগুলোর মধ্যে একটি গণপূর্ত অধিদপ্তর। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার স্বপক্ষের সরকার ক্ষমতায় থাকার পরও অধিদপ্তরটিতে চলছে জামায়াত-শিবির পুনর্বাসন প্রক্রিয়া। আর সেটির নেতৃত্বে রয়েছেন গণপূর্ত অধিদপ্তরের নতুন দায়িত্ব পাওয়া প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। নির্ভরযোগ্য সূত্র এসব নিশ্চিত করেছে। পূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামের স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে পূর্বপশ্চিমের ধারাবাহিক প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব প্রকাশিত হলো আজ।

গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান মুন্সী অবসরে গেছেন। তখন থেকেই বিএনপি-জামায়াত সমমনা হিসাবে সেই সময়কার অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম দৌঁড়ঝাপ করে চিফ ইঞ্জিনিয়ারের পদে বসেন।

বিএনপি-জামায়াতপন্থি আমলা হিসাবে পরিচিত হলেও সরকারের একজন প্রভাবশালী মন্ত্রীর হস্তক্ষেপে তিনি প্রধান প্রকৌশলীর পদ দখলে দেন। এরপর শুরু হয় স্বেচ্ছাচারিতা। দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তিনি বেপোরোয়া হয়ে নিজের পছন্দের লোকদের ঢাকায় বদলি করে নিয়ে আসেন। একইসঙ্গে ৮ জন ডিভিশন প্রধান হিসাবে দায়িত্ব পালন করা প্রকৌশলীকে ঢাকার বাইরে বদলী করে দেন। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের লোকদের এভাবে বদলী করা নিয়ে পূর্তভবনে এক ধরণের দুশ্চিন্তায় পড়েছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।

গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বিষয়ক সংসদীয় কমিটিতেও বিষয়টি নিয়ে ব্যাপক তুলকালাম হয়েছে। সংসদীয় কমিটির চেয়ারম্যান থেকে শুরু করে প্রত্যেক সদস্যের জেরার মুখে পড়েন প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম। কেন মাত্র ৬ থেকে ১০ মাস আগে ঢাকায় বদলী হওয়া অফিসারদের আবারো ঢাকার বাইরে পাঠানো হলো? এমন প্রশ্নের জবাব জানতে চায় সংসদীয় কমিটি। কিন্তু কোনো উত্তর দিতে পারেননি রফিকুল ইসলাম।
rafiqul
সংসদীয় কমিটির এক সদস্য এ প্রতিবেদকে বলেন, একজন অফিসারকে কমপক্ষে তার কাজ ভালোভাবে করার জন্য ৩ বছর সময় দেওয়া উচিত। বারবার বদলীর ফলে তার পরিবার পরিজন নিয়েও বিপাকে পড়তে হয়। প্রধান প্রকৌশলী তার নিজের পছন্দের লোকদের বসিয়ে নিজের কমিশন বাণিজ্যটা ভালোভাবে চালিয়ে যেতে চাচ্ছেন বলেই এমনটা করেছেন বলে আমরা বিশ্বাস করি। বিষয়টা প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে বলেওও জানান সংসদীয় কমিটির ওই সদস্য।

এদিকে পূর্ত অধিদপ্তরের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে, প্রধান প্রকৌশলী হিসাবে যোগদানের পর থেকেই নিজের পছন্দের বিএনপি-জামায়েতের লোকদের ঢাকায় বদলী করে নিয়ে আসছেন। এতে করে সরকারের পক্ষে অবস্থান নেওয়া কর্মকর্তারা কোণঠাসা হয়ে পড়েছেন।

উল্লেখ্য মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ে রাজাকাদের শিরোমনি, জামায়াতে ইসলামীর সাবেক আমীর গোলাম আজমের বোনের ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন গোলাম আজমের পরিবারেরই একজন।

এসব অভিযোগের বিষয়ে পূর্ত অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর মুঠোফোনে কয়েকবার ফোন করলেও তিনি ধরেননি। এমনকি কথা বলার জন্য এ প্রতিবেদকের মুঠোফোন থেকে এসএমএস করা হলেও তার জবাব দেননি। পরবর্তীতে প্রধান প্রকৌশলীর অফিসে ফোন করলে তিনি ব্যস্ততার দোহািই দিয়ে কথা বলতে রাজি হননি। কিন্তু তার ব্যক্তিগত কর্মকর্তা মো. মফিজ এ প্রতিবেদককে তার অফিসে যাওয়ার জন্য দাওয়াত দেন।